ব্যাঙ্ক জালিয়াতির পর এবার পেমেন্ট অ্যাপ জালিয়াতিকে কেন্দ্র করে পুলিশ-প্রশাসনের ঘাম ছুটছে । পেটিএম-এ কেওয়াইসি দেওয়ার নামে মেসেজ পাঠানো হচ্ছে বিভিন্ন মোবাইলে । আর এই মেসেজের লিঙ্কে ক্লিক করলেই লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যাঙ্ক থেকে নিমেষেই গায়েব হয়ে যাচ্ছে । এই অভিযোগ পাওয়ার পর কলকাতা পুলিশ তদন্ত করে শনিবার গভীর রাত পর্যন্ত দেওঘর এবং জামতাড়ার বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে মোট পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁদের রবিবার স্থানীয় আদালতে পেশ করা হবে। সেখান থেকে ট্রানজিট রিমান্ডে নিয়ে আসা হবে কলকাতায়।
কলকাতা পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, ১৫ জানুয়ারি সমীর কুমার সিনহা নামে এক ব্যক্তি শেক্‌সপীয়র সরণি থানায় প্রতারণার অভিযোগ জানান। তিনি পুলিশকে জানিয়েছিলেন, তিনি একটি ফোন পান। সেই ফোনে বলা হয় পেটিএমে তাঁর কেওয়াইসি আপডেট করতে হবে। তাঁকে একটি লিঙ্ক পাঠানো হয় এসএমএস–এ। সেই লিঙ্ক–এ ক্লিক করে কেওয়াইসি আপডেট করা মাত্রই তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে গায়েব হয়ে যায় প্রায় সাত লাখ টাকা।কলকাতা পুলিশ সূত্রে খবর, শুধু ওই ব্যক্তি নন, শহর জুড়ে তিরিশের বেশি এ ধরনের প্রতারণার ঘটনা ঘটেছে। প্রতি ক্ষেত্রেই অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির ফোন পেয়ে মেসেজে পাঠানো লিঙ্ক ক্লিক করে কেওয়াইসি আপডেট করতে গিয়ে টাকা খুইয়েছেন মানুষ।  কলকাতা পুলিশের এক গোয়েন্দা কর্তা বলেন, ‘‘ওই লিঙ্কের মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে প্রতারণার চাবিকাঠি।” লিঙ্কে ক্লিক করা মাত্রই গ্রাহকের মোবাইল দূর থেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে জালিয়াতরা। সেখান থেকে নেট ব্যাঙ্কিংয়ের মাধ্যমে কয়েক মূহুর্তের মধ্যে গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা পাচার হয়ে যায় অন্য অ্যাকাউন্টে।” প্রাথমিক তদন্তের পর জামতাড়া গ্যাংকেই চিহ্নিত করে পুলিশ। কিন্তু দেড়শোর বেশি ভুয়ো নথিতে তৈরি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ওই জালিয়াতির টাকা পাচার হওয়ায়, শুরুর দিকে মূল গ্যাংকে চিহ্নিত করতে পারেনি পুলিশ।
কলকাতা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সমীরবাবুর প্রতারণার তদম্তে নেমে বিনোদ কুমার পণ্ডিত নামে দেওঘরের ২২ বছরের এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। একই সঙ্গে হেয়ার স্ট্রিট থানায় গত বছর জুলাই মাসে ৮৮ লাখ টাকার একই ধরনের প্রতারণার ঘটনায় জামতাড়া ও ধানবাদ থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে চারজনকে। ৮৮ লাখ টাকার প্রতারণার ঘটনায় এর আগে আরও সাতজনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। ৮৮ লাখের মধ্যে ৩০ লাখ টাকা উদ্ধারও করেছিল পুলিশ।
কলকাতা পুলিশের এক তদন্তকারী বলেন, ধৃতদের কলকাতায় এনে জেরা করলে বোঝা যাবে ওই গ্যংয়ের আসল চেহারা। শুধু কলকাতা নয়, একই ভাবে এরা ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে প্রতারণা করছে। সম্প্রতি দিল্লি পুলিশের তরফ থেকেও পেটিএম প্রতারণা নিয়ে সতর্ক করা হয়েছে। 

మరింత సమాచారం తెలుసుకోండి: