গোটা বিশ্ব যখন আমাজন ফরেস্ট ফায়ার  ও ধ্বংসপ্রায় অবস্থা নিয়ে উদ্বিগ্ন, ঠিক সেই সময় রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড: তাপস পাল পৌঁছে গেলেন পশ্চিম আমাজনের একশো কিলোমিটার গভীর অরণ্যে কুনিয়া হ্রদের কাছে | সঙ্গী ছিলেন ইউনিভার্সিটি অফ রণডোনিয়ার প্রফেসর ফ্লাভিও ডি সাও পেড্রো, ড: ইজাবেল, রণডোনিয়া মিলিটারি পুলিশ, দুটি স্পিড বোট | 
পরিবেশবিদ তাপস বাবুর উদ্দেশ্য ছিল আমাজনের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে জানা ও তা বিশ্ববাসির সামনে তুলে ধরা | রণডোনিয়া রাজ্যের পোর্টোভেলো শহর থেকে রণডোনিয়া সরকারের অনুমতি নিয়ে রণডোনিয়া পরিবেশ মিলিটারি পরিবেশের সহায়তায় 
আমাজন রেইন ফরেস্টের ভেতরে জামিরা নদী,  মাদীরা (আমাজন নদীর দীর্ঘতম উপনদী) নদী হয়ে গভীর গহন ভয়ঙ্কর আমাজন জঙ্গলে গবেষণার উদ্দেশ্য নিয়ে পাড়ি দিয়েছিলেন তাপস বাবু | সেখানকার বিপদ সংকূলের কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেছেন বোট থেকে জলে পড়লে কুমিরের হাতে মৃত্যু,  সন্ধের পর অরণ্যে থাকলে এনাকোন্ডা,  জাগোয়ার, ভয়ঙ্কর জীবজন্তুর হাতে অবসম্ভাবী মৃত্যু | হাজার হাজার পাখির সমাগম, জলে কুমিরের আনাগোনা, বিভিন্ন রকম সাপের চলাচল 
প্রত্যক্ষ দেখতে পাওয়া যায় আমাজনের গভীর জঙ্গলে | তার একশো কিলোমিটারের সার্ভেতে কোনো ফরেস্ট ফায়ার খুঁজে পাননি | একই সাথে তিনি ইউনিভার্সিটি অফ রণডোনিয়ার বিভিন্ন অধ্যাপকদের সাথে কথোপকথনের মাধ্যমে ও দশ দিনের প্রত্যক্ষ সার্ভের পর জানিয়েছেন “আমাজন ফরেস্ট ফায়ার নিয়ে যে মিডিয়াতে এত শোরগোল তা অধিকাংশই সাজানো গোছানো,
  হতে পারে কোনো রাজনৈতিক অভিপ্রায় | আমাজন রয়েছে আমাজনের মতোই,  জীব বৈচিত্রে ভরা, আমাজন যথেষ্ট সুস্থ | তবে ব্রাজিলে ও আশেপাশের শহরগুলিতে প্লাস্টিকের ব্যবহার বেড়েছে ব্যাপক পরিমানে |” বিপদের কথা বলতে গিয়ে তিনি আরও বলেছেন,  'আমাজনের দীর্ঘতম উপনদী মা দীরা নদীতে চলছে বেআইনি সোনা উত্তোলন' | আমাজনের ভেতরে তার এই একশো কিলোমিটার সার্ভেতে বারোটির বেশি ভাসমান বেআইনি বোট সহ যন্ত্রাংশ নজরে পড়েছে |
 অন্যান্য নদীর সাথে আমাজনের তুলনায় করতে গিয়ে তাপসবাবু বলেছেন,   “এ যেন সাগর, নদী নয় এবং মূল নদী থেকে যে ছোটো ছোটো চ্যানেলগুলো আমাজনের আরও গভীর অরণ্যের দিকে ঢুকে যায় সেই পথে বোট নিয়ে যাওয়ার অভিজ্ঞতা, বিপদ রাস্তার পদে পদে| বোটের সাথেই চলমান কুমির,  উড়ছে বন্য পাখি, দুই পাশের ফরেস্ট থেকে যেন ধেয়ে  আসছে আপনার ওপরে, বোটের নিচে জল আছে মনে হলেও তার নিচে লুকিয়ে আছে অজানা গাছের গুঁড়ি, যার সাথে ধাক্কা লেগে বোট উল্টে যেতে পারে যে কোনো সময় |” তার এই সমগ্র সফরের ব্যয়ভার বহন করেছেন ব্রাজিলের ফিমকা (FIMCA),  GEITEC,  Rondonia University, ও Rural Federal University of Rio de Janeiro | আমাজনের সম্পদ মানুষের ব্যবহারের জন্য নয় এবং আমাজনকে আমাজনের মতো থাকতে দেওয়ার বার্তাই দিতে এসেছেন ড: তাপস পাল তার বক্ত্যব্যের মাধ্যমে রণডোনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে | একই সাথে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের GEITEC-এর সাথে সহযোগী আমাজন গবেষণার ছাড়পত্রও নিয়ে এসেছেন সারা জীবনের জন্য |তবে আমাজনের  বোটো মাছ অতিরিক্ত শিকারের ফলে তা বিলুপ্ত হতে চলেছে |  মানুষকে সচেতন করতে ও স্থানিয় দরিদ্রতা দূর করতে পোর্টো ভেলহোর স্থানিয় সরকার কে  বেশ কিছু প্লানিং দিয়ে এসেছেন | পোর্টো ভেলহোর  রোটারী ক্লাব এর ভাইস-চেয়ারম্যান ডাঃ ইজাবেল এর সাথে এই ব্যাপারে কাজ শুরু করে দিয়েছেন  বলে অধ্যাপক ডঃ তাপস পাল।
প্রকাশ আমাদের বর্তমানে কথা প্রথম জানিয়েছিল যে রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডঃ তাপস পাল যাচ্ছেন ব্রাজিলের আমাজনে গবেষণা করতে।


మరింత సమాచారం తెలుసుకోండి: