মারণ ভাইরাস আক্রান্ত চিনকে সাহায্য করতে একটি বিশেষ বিমানে করে চিকিৎসার প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সে দেশে পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছিল দিল্লি। এ-ও জানিয়েছিল, ফেরার সময়ে উহানে আটকে থাকা বাকি শ’খানেক ভারতীয়কে নিয়ে আসবে তারা। পড়শি দেশের কোনও নাগরিক ভারতের বিমানে ফিরতে চাইলে, তাঁদেরও নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছিল। কিন্তু এ পর্যন্ত সবুজ সঙ্কেত দেখাল না চিন। ভারতীয় দূতাবাস আজ বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, চিন সরকার অনুমতি দিচ্ছে না বলেই উহানে উদ্ধারকারী বিমান পাঠানো সম্ভব হচ্ছে না। 

 

গত ২০ ফেব্রুয়ারি ভারতীয় বায়ুসেনার বিমান ‘সি-১৭ গ্লোবমাস্টার’ উহানে পাঠানোর কথা ছিল। নোভেল করোনাভাইরাস বা সিওভিআইডি-১৯ সংক্রমণের উৎসস্থল চিনের এই শহর। কিন্তু বৃহস্পতিবার বিমানটি উহানের উদ্দেশে পাড়ি দিতে পারেনি। কারণ চিন সরকার ছাড়পত্র দেয়নি। শুধু তা-ই নয়, এর পরে দু’টো দিন চলে গেলেও কোনও উচ্চবাচ্য করেনি তারা। 

 

এ মাসের গোড়ায় দু’টি বিশেষ বিমানে করে ৬৪৭ জন ভারতীয়কে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। এখনও শ’খানেক ভারতীয় আটকে রয়েছেন উহানে। দিল্লির প্রশাসনিক স্তরের একটি অংশের দাবি, ‘‘চিন ইচ্ছাকৃত ভাবেই উদ্ধারকারী বিমানের ছাড়পত্র দিচ্ছে না।’’ তাদের প্রশ্ন, ১৬ থেকে ২০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে জাপান, ইউক্রেন, ফ্রান্সকে উড়ান চলাচলে অনুমতি দিয়েছে চিন, তা হলে ভারতকে অনুমতি দেওয়া হল না? অভিযোগ অস্বীকার করেছে চিনা দূতাবাস। দূতাবাসের মুখপাত্র জি রং বলেন, ‘‘হুবেই প্রদেশের বর্তমান পরিস্থিতি খুবই জটিল। করোনাভাইরাস প্রতিরোধ ও রোগ নিয়ন্ত্রণের প্রচেষ্টা একটা কঠিন ধাপে রয়েছে। এ অবস্থায় ইচ্ছাকৃত ভাবে বিমান আসার অনুমতি না দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।’’ চিনের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র গেং শুয়াং-ও একই কথা বলেছেন। কিন্তু কেন বিমানটিকে অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না, তা ব্যাখ্যা করেননি তিনি। 

 

বৃহস্পতিবার দেশে ফেরার আশায় মুখিয়ে ছিলেন উহানে আটকে থাকা বাকি ভারতীয়েরা। বিমান না আসায় মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছেন তাঁরা। তাঁদের শান্ত করতে আজ বেজিংয়ের ভারতীয় দূতাবাসের পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি দেওয়া হয়েছে— ‘‘ভারতের বিমান তৈরি রয়েছে। কিন্তু চিন সরকার অনুমতি না দেওয়ায় বিমান পাঠানো সম্ভব হচ্ছে না। কেন তারা অনুমতি দিচ্ছে না, তা-ও চিন জানায়নি। আমরা নিয়মিত চিনের প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। শান্ত থাকুন। একে অন্যকে সাহায্য করুন। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিমান পাঠানো হবে।’’ 

 

শনিবার চিনে মৃতের সংখ্যা ২৩৪৫ ছুঁয়েছে। নতুন করে আরও ১০৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। চিন ছাড়িয়ে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়েছে অন্তত ২৭টি দেশে। সম্প্রতি প্রথম ইউরোপীয়ের মৃত্যু হয় ইটালিতে। শনিবার দ্বিতীয় মৃত্যুরও খবর মিলল ইটালির কোডোগনো শহর থেকে। চিনের অনুকরণেই ‘তালাবন্ধ’ করা হয়েছে শহরটিকে। 

 

 

మరింత సమాచారం తెలుసుకోండి: