ডা. প্রিয়দর্শিনী ভট্টাচার্য

 

লাতিন ভাষায় 'করোনা' শব্দের অর্থ মুকুট। করোনাভাইরিডি পরিবারের সকলেরই গঠন অনুবীক্ষণে দেখলে মুকুটের মত দেখায়। এই ভাইরাস প্রাণী থেকে মানুষের শরীরে সংক্রমিত হয়। এর আগে চিনে সার্স (Severe Acute Respiratory Syndrome) ছড়িয়েছিল civet cat থেকে, সৌদি আরবে মার্স Middle East Respiratory Syndrome) ছড়িয়েছিল গৃহপালিত উট থেকে। এগুলো সবই করোনা ভাইরাস ছিল। কিন্তু এবারে মেইনল্যান্ড চায়নায় হুবেই প্রদেশের ইউহান শহরে নিউমোনিয়ার মত যে রোগটি ছড়িয়েছে, সেটি নতুন ধরনের (নভেল) বিটা-করোনা ভাইরাস। ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকে জানুয়ারির 2 তারিখ অব্দি সেখানে মোট 41 জন রোগীর শরীরে এই ভাইরাস পাওয়া যায়, যাদের মধ্যে 27 জনের সঙ্গে স্থানীয় হুয়ানান সি-ফুড মার্কেটের কোনও না কোনও ভাবে যোগোযোগ ছিল। অবশ্য ঐ মার্কেটে সি-ফুড ছাড়াও ইঁদুর, আরশোলা, সাপ, কুকুর, বেড়ালসহ অনেক প্রাণী কেনাবেচা হয়। তাই এখনো স্পষ্ট নয় কোন প্রাণী থেকে ছড়াচ্ছে এই ভাইরাস। 

 

উপসর্গ :

'দ্য ল্যান্সেট' জার্নালে তিনদিন আগে প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী ঐ 41 জনের গড় বয়স ছিল 49 বছর, এঁদের মধ্যে 30 জন পুরুষ, বাকিরা মহিলা। তাঁদের একজন বাদে সকলেরই জ্বর ছিল, 31 জনের কাশি, পেশীতে ব্যথা ছিল 18 জনের, 11 জনের কফ্ উঠছিল, মাথাব্যথা ছিল 3 জনের, 2 জনের কাশিতে রক্ত উঠছিল, একজনের ডায়রিয়াও ছিল। শ্বাসকষ্ট ছিল 22 জনের, গড়ে অসুখের শুরুর গড়ে আট দিন পর থেকে শ্বাসকষ্ট শুরু হয়েছিল। শেষতক 41 জনেরই নিউমোনিয়া হয়।

 

এখন সারা চিনদেশ এবং নেপাল, শ্রীলঙ্কাসহ এশিয়ার আরও ছয়টি দেশে মোট কয়েক হাজার মানুষ আক্রান্ত, মৃতের সংখ্যা একশো ছাড়িয়েছে। সেসব রোগীদের বিশদ তথ্য সবটা এখনও প্রকাশিত হয়নি। তবে এই সংক্রমণ সার্সের চেয়ে দ্রুতগতিতে ছড়ালেও মৃত্যুর হার সার্সের চেয়ে কম। 

 

আপনার কী করনীয় :

 

এক) কফ্ এটিকেট মেনে চলা অর্থাৎ হাঁচি কাশি হলে নাকে-মুখে রুমাল বা হাত/কনুই চাপা দিয়ে হাঁচুন/কাশুন।

 

দুই) বাইরে বেরোলেই ঘরে/অফিসে ফিরে সাবান দিয়ে দু'হাত ভালো করে ধুয়ে তবে নাকে-মুখে হাত দিন।

 

তিন) ডিম/দুধ/মাংস/মাছ ভালো করে ফুটিয়ে রান্না করে তবেই খান।

 

চার) সদ্য চীন-ফেরত কারোর থেকে এবং সর্দি-কাশিতে ভুগছেন এমন কারোর থেকে নিরাপদ (তিন ফুটের বেশী) দূরত্ব বজায় রাখুন।

 

পাঁচ) বাইরে বেরোলে মাস্ক পড়ুন। এক্ষেত্রে সবচেয়ে কার্যকরী NIOSH-সার্টিফায়েড N95 মাস্ক।

 

ছয়) খুব জরুরী না হলে চীন-সহ আক্রান্ত দেশগুলিতে ভ্রমণ স্থগিত রাখুন।

మరింత సమాచారం తెలుసుకోండి: