ব্যোমকেশ বক্সী তার কেরিয়ারে যত রহস্যের সমাধান করেছে, তার চেয়ে বেশি রহস্য তাকে ঘিরে তৈরি হয়েছে! যবে থেকে বড় পর্দায় ব্যোমকেশ বক্সী এসেছে, তবে থেকে এই চরিত্রটিকে নিয়ে যা যা কাণ্ড ঘটেছে, তা নিয়ে বই লিখে ফেলা যায়। যার নবতম অধ্যায় হতে পারে— ব্যোমকেশ বদল। শোনা যাচ্ছে, এসভিএফ এ বার বড় পর্দায় আবীর চট্টোপাধ্যায়ের বদলে অনির্বাণ ভট্টাচার্যকে ব্যোমকেশ হিসেবে আনতে চলেছে। কিছু দিন আগে ব্যোমকেশের পরিচালক বদল হয়েছিল। অরিন্দম শীলের জায়গায় এসেছিলেন বিরসা দাশগুপ্ত। এ বার বদল হতে চলেছে চরিত্রের মুখ।

 

কিন্তু এই অপসারণের কারণ কী? প্রযোজনা সংস্থার অন্দরে এ নিয়ে নানা কথা ঘুরছে। শোনা যাচ্ছে, আবীরের সঙ্গে সংস্থার অন্যতম কর্তা  মহেন্দ্র সোনির কিছু বিষয়ে মতপার্থক্য হয়েছে। অঞ্জন দত্তের পরিচালনায় আবীর ব্যোমকেশ হলেও, অরিন্দমের তৈরি ব্যোমকেশ বক্সী অভিনেতার কেরিয়ারকে আলাদা মাইলে‌‌জ দিয়েছিল। তাই অরিন্দম ছবি থেকে সরে যাওয়ায় স্বাভাবিক ভাবেই আবীরের খানিক আপত্তি ছিল। প্রযোজনা সংস্থা বিরসাকে নতুন ব্যোমকেশের চিত্রনাট্য প্রস্তুত করতে বলে। ‘ব্যোমকেশ ও বরদা’ কাহিনিটি নিয়ে বিরসা একটি খসড়া তৈরিও করেন। তবে তা নাকি আবীরের পছন্দ হয়নি।

 

এর আগে আনন্দ প্লাসকেই আবীর জানিয়েছিলেন, ব্যোমকেশ নিয়ে দর্শকের প্রত্যাশা এমন জায়গায় গিয়েছে যে, আগের ছবিগুলোকে ছাপিয়ে যাবে এমন ভাবে নতুন ব্যোমকেশ বানানো উচিত। গত পুজোতেই বিরসার পরিচালনায় ব্যোমকেশের আসার কথা ছিল। কিন্তু সংস্থা সিদ্ধান্ত থেকে পিছু হটে। মহেন্দ্র সোনি টুইট করে জানান, তাঁরা পুজোতে ব্যোমকেশ নিয়ে আসছেন না। কিন্তু ফের ব্যোমকেশ নিয়ে ছবি করার কথা উঠেছে এবং তার সঙ্গে নতুন ব্যোমকেশ হিসেবে অনির্বাণের নাম উঠে আসছে। যাকে হইচই প্ল্যাটফর্মে সত্যান্বেষীর চরিত্রে দেখা গিয়েছে। এ প্রসঙ্গে আবীরের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা হলে, তাঁকে পাওয়া যায়নি।

 

এর মধ্যে একাধিক অঙ্ক রয়েছে। এই মুহূর্তে এসভিএফ-এর সবচেয়ে পছন্দের অভিনেতার নাম অনির্বাণ ভট্টাচার্য। সংস্থার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ এই অভিনেতা তাদের প্রায় সব ছবিতেই রয়েছেন। দেবালয় ভট্টাচার্যের একটি ছবিতে তুহিনার সঙ্গে কাজ করার কথা অনির্বাণের। দীর্ঘ সময় কাজ
ছিল না আবীরের।

আবীরকে সরিয়ে অনির্বাণকে নেওয়ার পিছনে আরও একটি বিষয় রয়েছে। ধ্রুব বন্দ্যোপাধ্যায়ের সোনাদা সিরিজ় আবীরকে তুমুল জনপ্রিয়তা দিয়েছে। আবার অনেকের মতে, আবীরের জনপ্রিয়তা সোনাদাকে বক্স অফিসে জিতিয়েছে। সোনাদা মৌলিক সিরিজ়। তা নিয়ে অন্য কেউ টানাটানিও করতে পারবে না। এটি আবীরের হাতে রয়েছে। যদিও পরবর্তী সোনাদা প্রজেক্ট কবে হবে, তা স্থির নেই। এ দিকে ব্যোমকেশ জনপ্রিয় হতে পারে কিন্তু ছবির উপযোগী গল্প আর বেশি নেই। তার উপর ভাগীদার হিসেবে অন্য নির্মাতারাও আছেন। হাতে রয়েছে ফেলুদা সিরিজ়। যেখানে আগে আবীরকে (বাদশাহী আংটি) দেখা গিয়েছে। সন্দীপ রায় তাঁর শেষ ফেলুদা (ডবল ফেলুদা) অন্য প্রযোজনা সংস্থায় সব্যসাচী চক্রবর্তীকে নিয়ে করেছিলেন। ফেলুদার এসভিএফ-এ ফেরত আসার সম্ভাবনা প্রবল। সে ক্ষেত্রে এটি আবীরের হস্তগত হতে পারে। যদি না প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে যিশু সেনগুপ্তর নাম উঠে আসে। আবীরের সঙ্গে সংস্থার সম্পর্ক কোন খাতে বইবে, তার উপর অনেক কিছুই নির্ভর করছে।

ব্যোমকেশ বক্সীকে নিয়ে এই টানাটানির মূল কারণ বক্স অফিস। তাই আবীর, অনির্বাণ কিংবা পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়— সকলের কাছেই এটি লোভনীয় প্রজেক্ট এবং সকলেই সকলের পথের কাঁটা

 

మరింత సమాచారం తెలుసుకోండి: