গত ১৮ সেপ্টেম্বর দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, সেই বৈঠকে বাংলার বকেয়া প্রকল্পগুলির প্রসঙ্গ তুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তা শুনে সমস্ত বকেয়া বিষয় নিয়ে বাংলার সঙ্গে আলাদা করে বসার কথা বলেন নরেন্দ্র মোদী। তিনি আশ্বাস দেন, সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মন্ত্রকও একসঙ্গে বসে বাংলার সমস্যা মেটানোর ব্যাপারে সক্রিয় হবে। 

 

প্রধানমন্ত্রীর এই আশ্বাসের পরেই কেন্দ্রের কাছ থেকে প্রায় ৪১ হাজার কোটি টাকার বকেয়া পেতে একটি দাবিপত্র তৈরি করছেন রাজ্যের অর্থসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। মোদী-মমতা বৈঠকের পরেই তিনি বিভিন্ন দফতরের সচিবকে চিঠি লিখে ২৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বকেয়া বিষয়গুলি নিয়ে মতামত চেয়ে পাঠান। অর্থসচিব লেখেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যের সঙ্গে আলোচনায় বসবে। তাই দ্রুততার সঙ্গে বকেয়া বিষয়গুলির ‘সর্বশেষ’ পরিস্থিতি জানানো হোক।’ অর্থ দফতর সূত্রের খবর, ১১টি দফতরের ২৩ দফা দাবি চূড়ান্ত করতে এখন শেষ পর্বের কাজ চলছে। 

 

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেন  ‘‘যদি বাংলার ন্যায্য পাওনা থাকে, তা হলে কেন্দ্র তা মিটিয়ে দেবে। কিন্তু রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে অনৈতিক দাবি তোলা হলে তা মানা সম্ভব নয়।’’

 

অর্থ দফতর সূত্রের খবর, গঙ্গা-ভাগীরথী-হুগলি সিস্টেম, দামোদর, রূপনারায়ণ, সুবর্ণরেখা, কংসাবতী, তিস্তা, তোর্সা, জলঢাকা নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা গড়ে তোলা, দামোদর, ময়ূরাক্ষী, কংসাবতী, তিস্তা ব্যারাজ প্রকল্পের সংস্কার ও পুনর্বাসনের জন্য মোটা টাকা চাওয়া হচ্ছে। রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির পুনর্গঠনের জন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ৭৮০০ কোটি টাকা ঋণ নিতে চায় রাজ্য। বাজেট নিয়ন্ত্রণ আইনের সীমার বাইরে গিয়ে সেই ঋণ নেওয়ার ছাড়পত্র চাইছে রাজ্য। এ ছাড়া, কলকাতার বিকল্প বিমানবন্দর হিসেবে অন্ডালকে গড়ে তোলার জন্য দাবি জানাচ্ছে রাজ্য। কলকাতার সঙ্গে দুর্গাপুরের যোগাযোগ দ্রুত করতে হাইস্পিড ট্রেন চালানোর দাবিও রাখা হচ্ছে। সেই সঙ্গে কলকাতা থেকে লন্ডন ও ফ্রাঙ্কফুর্ট বিমান পরিষেবা ফের শুরু করার দাবি জানানো হচ্ছে। 

আরও বিভিন্ন প্রকল্প যেমন অর্থ দফতর জানাচ্ছে, পিছিয়ে পড়া এলাকার জন্য ব্যাকওয়ার্ড রিজিয়ন গ্রান্ট ফান্ড (বিআরজিএফ), চতুর্দশ অর্থ কমিশনের বকেয়া, শিক্ষকদের বেতন, মিড-ডে মিল, সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্প, নগরায়ণের জন্য অমৃত প্রকল্প, গ্রামীণ এলাকায় স্বচ্ছ ভারত মিশনের জন্যও টাকা চাওয়া হচ্ছে। পুলিশের নজরদারি ব্যবস্থা ও পরিকাঠামো আরও পোক্ত করার জন্য মোটা টাকা চাইছে রাজ্য। কিষাণ ক্রেডিট কার্ড, ফসলের বিমা, উদ্যান পালনের প্রকল্প, বাংলাদেশি ছিটমহলের পরিকাঠামো উন্নয়নের দাবিও রাখা হচ্ছে। পাশাপাশি, ডেউচা-পাঁচামি কয়লা খনি প্রকল্পে আংশিক উত্তোলনের অনুমোদন এবং ৫৩টি পরিত্যক্ত কয়লা খনির জমি বিকল্প ব্যবহারের অনুমতি চাইবে নবান্ন। হলদিয়া বন্দরের ড্রেজিং, সাগর ও তাজপুরের দু’টি বন্দর আরও দ্রুত গড়ে তোলার দাবি ফের তুলতে চলেছে রাজ্য। 

 

 

 


మరింత సమాచారం తెలుసుకోండి: