রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে তাঁর অভিযোগের শেষ নেই। এবার স্বাস্থ্য পরিসেবা নিয়েও রাজ্যের সাথে সংঘাতের পথে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। ২০০৪ সালের ২৯ জুন রাজ্যপালের অধীনে যে-ওয়েলফেয়ার বা কল্যাণ তহবিল গড়া হয়েছিল, তা থেকে সাধারণের চিকিৎসা খাতে তিনি টাকা দেবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন ধনখড়।

একান্ত সাক্ষাৎকারে রাজ্যপাল আনন্দবাজারকে জানিয়েছেন, বীরেন জে শাহ রাজ্যপাল থাকাকালীন ওই কল্যাণ তহবিল গড়া হয়েছিল। সেখানে বলা আছে: স্বামীহারা মহিলা, প্রাক্তন সেনাকর্মী, বয়স্ক ও সহায়সম্বলহীন অনাথ, পরিবার থেকে পরিত্যক্ত— এমন সব মানুষকে সাহায্য করার কাজে এই তহবিল ব্যবহার করতে হবে। ধনখড়ের প্রশ্ন, ‘‘সার্বিক শিক্ষার খাতে, পরিবেশ রক্ষার খাতেও ওই টাকা খরচ করার কথা। তা না-করে ব্যক্তি-মানুষের চিকিৎসা খাতে খরচ হবে কেন?’’

কিন্তু অসংখ্য মানুষ যে চিকিৎসার প্রয়োজনে সাহায্যের আবেদন করে রেখেছেন? তাঁরাও তো দাবিদার? এর জবাব দিতে গিয়েই রাজ্যপাল স্বাস্থ্যের হাল নিয়ে রাজ্য সরকারকে বিঁধেছেন। কেন্দ্রের আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পে যোগ না-দেওয়ায় রাজ্যের সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘ভাবতে পারেন, তিন মাসে তিন হাজার মানুষ শুধু চিকিৎসার জন্য টাকা চাইছেন! এতে তো রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার বেহাল ছবিটাই ফুটে উঠছে। এক দিকে রাজ্য বলছে, সকলকে বিনা পয়সায় চিকিৎসা দেওয়া হবে। কিন্তু আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের টাকা ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। অথচ ওই খাতে দিল্লি থেকে কয়েক হাজার কোটি টাকা পেতে পারত পশ্চিমবঙ্গ। সামান্য টাকার জন্য যাঁরা আমার কাছে আবেদন করেছেন, তাঁরা অনায়াসে সেই টাকা পেয়ে যেতেন।’’

কিন্তু কল্যাণ তহবিলের টাকা তো রাজ্যের বাজেট থেকে আসে? সাধারণ মানুষ তা পাবেন না কেন?

রাজ্যপালের জবাব, ‘‘তহবিলটা তো রাজ্যপালের নিয়ন্ত্রণে। রাজ্য যদি কাল ওই টাকা বন্ধ করে দেয়, দিক। কিন্তু আমি এই টাকা চিকিৎসার জন্য দেব না।’’ তাঁর যুক্তি, রাজ্যপালের এই তহবিলে রয়েছে মাত্র দু’‌কোটি টাকা। তিন হাজার আবেদনকারীকে সেটা দিতে হলে বড়জোর ৬-৭ হাজার টাকা পড়বে প্রত্যেকের ভাগে। ফলে ওই টাকায় কোনও লাভ হবে না।

প্রশাসনের একাংশের বক্তব্য, কল্যাণ তহবিলের টাকা চিকিৎসা খাতে না-দেওয়ার সিদ্ধান্ত রাজ্যপাল যদি নিয়েই থাকেন, বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সেটা জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে না কেন? জানিয়ে দিলে মানুষের হয়রানি কমে।

 


మరింత సమాచారం తెలుసుకోండి: