প্রধানমন্ত্রী নানান সুরে ‘দিদি’ ডেকেছিলেন দিল্লির রামলীলা ময়দান থেকে, এবার অমিত শাহ যোধপুরে বিঁধলেন ‘মমতা দিদি’র নাম করে । তাঁর চ্যলেঞ্জ  মমতা নিজের ভোটব্যাঙ্ক সামলাচ্ছেন, কিন্তু হিন্দু শরণার্থীরা নাগরিকত্ব পাবেনই। নয়া নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) নিয়ে এক ইঞ্চিও পিছু হটবে না বিজেপি।

শাহের তোপের জবাব দিয়েছে তৃণমূলও। দলের শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে বলা হয়, ‘‘তৃণমূল নেত্রী আগেই বলেছেন জীবন থাকতে তিনি রাজ্যে সিএএ, এনআরসি করতে দেবেন না। আমাদেরও চ্যালেঞ্জ রইল, বিজেপি করে দেখাক।’’

জোধপুরের সভায় আজ মমতাকেই আক্রমণের মূল লক্ষ্য করেছিলেন শাহ। মেরুকরণের রাজনীতি উস্কে দিয়ে তৃণমূলনেত্রীর প্রতি তিনি প্রশ্ন ছোড়েন, ‘‘কোথায় যাবেন নমশূদ্র মানুষেরা? কোথায় যাবেন বাংলাভাষী শরণার্থীরা? আমি মমতাদিদিকে প্রশ্ন করতে চাই, এঁরা আপনার কী ক্ষতি করেছেন? বাঙালি দলিত, বাংলাভাষী হিন্দুরা আপনার কী ক্ষতি করেছেন? কেন এঁদের নাগরিকত্বের বিরোধিতা করছেন?’’

 

একই রকম চড়া সুরে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বও পাল্টা বলেছেন, ‘‘অমিত শাহ না-চেনেন পশ্চিমবঙ্গ, না-জানেন উদ্বাস্তুদের প্রকৃত সমস্যা কী। তাঁর জেনে রাখা উচিত, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় আসার পরে রাজ্যের সব উদ্বাস্তু কলোনিকে স্বীকৃতি দিয়েছেন। তার ফলে উদ্বাস্তুরা জমির অধিকার পেয়েছেন, নাগরিকত্বের স্বীকৃতি পেয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গই প্রথম রাজ্য, যেখানে উদ্বাস্তুদের এই অধিকার দেওয়া হয়েছে। আর সেই সত্য গোপন করে শাহ চাইছেন বিভ্রান্তি ছড়াতে। তাঁর দুরভিসন্ধি সফল হবে না।’’

 

অসমের অভিজ্ঞতা সামনে রেখে এনআরসির দরুন মানুষের হয়রানির আশঙ্কা নিয়ে সরব হয়েছেন মমতা। শাহ আজ বলেন, ‘‘মমতাদিদি আপনি বলেছেন, মানুষের লাইন পড়ে যাবে। নানা রকম প্রমাণ চাওয়া হবে। আমি বাংলায় বাস করা সব শরণার্থীকে আশ্বস্ত করছি, আপনারা এত দিন প্রতারিত হয়ে এসেছেন। আর সহ্য করতে হবে না। আপনাদের সম্মানের সঙ্গে নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। মমতাদিদিকে ভয় পাবেন না। মমতাদিদি আপনাদের ভাল চান না, নিজের ভোটব্যাঙ্ক সামলাতে চান।’’ 

যা শুনে তৃণমূলের প্রথম সারির এক নেতার মন্তব্য, ‘‘মমতা তাঁদের জন্য কী করেছেন, এ রাজ্যের উদ্বাস্তুরা তা জানেন। শাহ তাঁদের বিভ্রান্ত করতে পারবেন না।’’

শাহের অবশ্য অভিযোগ, মমতার সঙ্গে ‘রাহুলবাবা’ (রাহুল গাঁধী), মায়াবতী, কেজরীবাল, এসপি, বামেরা জোট বেঁধে মানুষকে বিভ্রান্ত করছেন। কিন্তু তাঁর কথায়, ‘‘সব দল একজোট হলেও নাগরিকত্ব আইন থেকে এক ইঞ্চিও পিছু হটবে না বিজেপি।’’ মমতাকে শাহের প্রশ্ন, গত কয়েক দশকে বাংলাদেশ, পাকিস্তানে সংখ্যালঘুর সংখ্যা কমে গিয়েছে কেন? এঁদের মেরে ফেলা হয়েছে, ধর্মান্তর করা হয়েছে, নাকি এঁরা ভারতে এসেছেন? শাহের দাবি, ‘‘এঁদের উপরে যা নির্যাতন হয়েছে, তার থেকে বেশি মানবাধিকার লঙ্ঘন হতে পারে না।’’

 

 

మరింత సమాచారం తెలుసుకోండి: