অনেক বড় বিপদ আজ আমাদের দোর গোড়ায়। আমরা এক ভয়ংকর আর্থিক মন্দার মধ্যে দ্রুত প্রবেশ করেছি। 
মোদী-শাহ- নির্মলা সীতারামন তিনজনেই জানেন, সরকারের হাতে টাকা নেই। আজই স্টেট ব্যাংক বলেছে, এটিএম কার্ড বন্ধ করে দেবে। নতুন অ্যাপ নিয়ে আসবে। কেন? আসল কারণ, লোকজনের ব্যাংক থেকে টাকা তোলা বন্ধ করতে। কারণ ভারতে 70% লোকের কাছেই স্মার্ট ফোন নেই। 
রিলায়েন্স-এর ব্যাংকের কাছে ধার প্রায় দেড় লাখ কোটি টাকা! সিংহভাগ জিওর জন্য। এয়ারটেল এর ধার এক লাখ কোটির ওপর!
অবস্থা কতটা খারাপ একটা উদাহরণ দিই। আপনার হকের প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা সরকারের কাছে থাকে। প্রতি বছর 1 এপ্রিল সুদের টাকা জমা হয়। এ বছর হয়নি। নাকি সার্ভার খারাপ। আরে ডিজিটাল ইন্ডিয়ায় 6 মাসে সার্ভার ঠিক হলো না?! গত বছরও একই যুক্তি ছিল।
পিএফের টাকা সরকার ধার নেয়। বিভিন্ন খাতে খাটায়। তারপর সুদ সমেত ফেতৎ দেয়। এটাই নিয়ম। এই বছর আজও গত বছরের টাকা ফেরত দেয়নি। দিলে খাতা কলমে এক লাখ কোটি টাকা শুধু সুদ দিতে হবে। সরকারের কাছে সেই টাকা নেই। 
আপনারা ভাসা ভাসা জানেন বিএসএনএল এর অবস্থা খারাপ। জানেন কি, শুধু কলকাতায় যাঁরা লাইন-ম্যান হিসেবে কাজ করেন, সেই 4800 কর্মচারী গত জানুয়ারির পর কোনো বেতন বা টাকা পাননি। সাত মাস ধরে কী করে তাঁদের পরিবার চলছে তাঁরাই জানেন। অনাহারে অসুস্থ হয়ে ইতিমধ্যে 7 জন মারা গেছেন। 
কলকাতায় এই মুহূর্তে 25 হাজার ল্যান্ড লাইন খারাপ। দিন দিন সংখ্যা বাড়ছে। কাজ করার লোক নেই। এই মুহূর্তে বিএসএনএল এর জন্য সরকারকে টাকা দিতে হবে। তাহলে 1 লাখ 75 হাজার কর্মী সেইসঙ্গে ঠিকাদার ও শ্রমিক মিলে 5 লাখ পরিবার বাঁচবে। সরকার দিতে পারবে কি?!
লোকের হাতে টাকা নেই। ফ্ল্যাট বিক্রী হচ্ছে না। এই মুহূর্তে দেশের 30 টি বড় শহরে 12 লাখ 80 হাজার তৈরি ফ্ল্যাট পড়ে আছে। কেনার লোক নেই। শুধু কলকাতায় 20 হাজারের উপর ফ্ল্যাট অবিক্রীত।
গাড়ি বিক্রী এতই কমে গেছে যে নয়ডার মারুতি গাড়ির কারখানা থেকে শুরু করে জামশেদপুরের টাটা মোটরস-এর উৎপাদন ক'দিনের জন্য বন্ধ রাখতে হচ্ছে। কর্মী ছাঁটাই শুরু হচ্ছে। একই অবস্থা বাজাজ এবং হিরো কোম্পানির। 
কয়েকশো গাড়ির শোরুম ঝাঁপ ফেলে ব্যাংকে জানিয়ে দিয়েছে, আমরা আর এখন টাকা শোধ করতে পারব না। 
কম্পিউটার এর জন্য অনুষঙ্গ বানানো কোম্পানি mosar বিয়ার এর মালিক আজই দেনার দায়ে গ্রেফতার হয়েছে। ভিডিওকন আগেই বন্ধ। মালিক বেনুগোপাল ধুত আগেই জানিয়ে দিয়েছেন, হাজার কোটি টাকা ব্যাংকের দেনা তাঁর পক্ষে শোধ করা সম্ভব নয়। 
বেশ কিছু সিমেন্ট কারখানা বন্ধ। 
ঝাড়খণ্ডের জয় বালাজি স্টিল কোম্পানি দু'দিন হল উৎপাদন বন্ধ করেছে। কারণ ইস্পাত এর বাজার নেই। টাটা স্টিল ও ওই পথ নিতে পারে। গত দুই মাসে শুধু ঝাড়খণ্ড এ বেকার হয়েছে 3 লাখ শ্রমিক। 
আজই কাপড় কলের মালিকরা কাগজে বিজ্ঞাপন দিয়ে জানিয়েছেন, বস্ত্র শিল্পের অবস্থা খুব খারাপ। বাজার নেই। কাপড় কলের মধ্যে তিনভাগের একভাগ এই বছরই বন্ধ হয়ে যেতে পারে। লোকসান করায় মিল মালিকরা ব্যাংকের টাকা শোধ করতে পারছে না। 
ওদের হিসেবেই তুলো চাষিদের নিয়ে কয়েক কোটি মানুষ এই শিল্পের সঙ্গে খেয়ে পরে বাঁচে। তাঁদের ভবিষ্যৎ কী কেউ জানে না। 
বিদেশে রফতানিও কমেছে দ্রুত। তার থেকেও বড় কথা ক'মাস বাদেই নতুন তুলো উঠবে। তার বাজার মূল্য 80 হাজার কোটি টাকা। বিক্রীর বাজার না থাকলে মিল মালিকরা তা কিনবে কেন? কিংবা আরও সস্তায় কিনবে। ফলে তুলো চাষিদের আত্মহত্যা আরও বাড়বে। 
কাশ্মীরে প্রায় 6 লাখ সেনা নিয়োগ করতে হয়েছে। তার বিপুল খরচ। কোনো যুদ্ধের থেকে খুব কম নয়। তা কিন্তু জোগাতে হবে। 
লোকের হাতে টাকা না থাকায় বা থাকলেও খরচ করতে ভয় পাওয়ার ফলে হোটেলে খাওয়া কমেছে। 
সাবান থেকে বিস্কুট সব কিছুর বিক্রী কমছে। অর্থাৎ কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের আয়ের যে অন্যতম উৎস GST সেখানেই বিপুল ঘাটতি দেখা দিতে চলেছে।
পরিস্থিতি থেকে বাঁচতে একটাই পথ সরকারি সম্পত্তি বিক্রী। কিন্তু কিনবে কে? পরিষেবা দেবে কে? তিন বার দরপত্র হাঁকার পর আজ অব্দি কেউ Air India কিনলো না । 

 

మరింత సమాచారం తెలుసుకోండి: