বুলেট ট্রেন, ইঞ্জিনে ট্রেন আমরা সবাই শুনেছি কিন্তু বাঁশের ট্রেন ঘোড়ার ট্রেন? অদ্ভুত না ! আশ্চর্য ! আশ্চর্য হলেও সত্যি ,  পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের গঙ্গাপুর গ্রামে এখনো চলে ঘোড়ায় টানা ট্রেন, যা চল শুরু হয় হাজার ১৯০৩ সাল থেকে , আজও ঘোড়াই চালিয়ে যাচ্ছে ইঞ্জিনের দায়িত্ব । এই ট্রেনের জন্য আছে নির্দিষ্ট স্টেশন  যাত্রী ছাউনি এমনকি টিকিট কাউন্টার, রীতিমতো টিকিট কেটে পড়তে হয় এই ট্রেনে। দুই বগি বিশিষ্ট এই ট্রেনে চড়তে পারে ১৬ জন যাত্রী একসাথে , ট্রেন লেট একটা নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা হলেও ঘোড়ায় টানা এই ট্রেন কখনোই লেট করেনা। চলতি পথে কখনো যদি দুটো ট্রেন মুখোমুখি হয়ে যায় তাহলে যাত্রীরা নেমে ট্রেন পরিবর্তন করে নেন , সেই সুযোগে অপর ট্রেনের দিক পরিবর্তন করে দেয় ট্রেনের চালক। ঘোড়ায় টানা এই ট্রেনের জনপ্রিয়তা অনেক, স্থানীয় লোক এর পাশাপাশি দূর-দূরান্ত থেকে অনেক মানুষের আগমন ঘটে এই পাঞ্জাবের এই ছোট্ট গ্রামে এই আশ্চর্য ঘোড়ায় টানা ট্রেন চলবে বলে । ১৯৯৩ সালে বন্ধ হলেও ২০০৭ সালে আবারও চালু হয় এই ঘোড়ায় টানা আশ্চর্য ট্রেন ।
শুধু পাকিস্তান নয় কম্বোডিয়ায় বাটাম বাং প্রদেশের  এখনো পরিবহন হিসেবে কাজে লাগানো হয় বাঁশের তৈরি অদ্ভুত ট্রেন, এটিতে ঘোড়া থাকে না বটে কিন্তু এই ট্রেন চলে ছোট্ট পেট্রোল ইঞ্জিন  এ , বিশ্ববাসীর কাছে যা ব্যাম্বো ট্রেন হিসেবে পরিচিত , তস্থানীয়রা তাকে নাম দিয়েছে নরি । অনেকটা আমাদের দেশের ভ্যানের মত দেখতে এই ট্রেনে চাকা হিসাবে ব্যবহার করা হয় পরিতক্ত মিলিটারি ট্যাঙ্ক এর চাকা । সর্বোচ্চ ৫০ কিলোমিটার বেগে ছুটতে পারে এই ট্রেন গতি নিয়ন্ত্রণের জন্য আছে বিশেষ ব্রেক । চলতি পথে কখনো যদি দুটো ট্রেন মুখোমুখি হয় তাহলে একটি ট্রেন কে লাইন থেকে নামিয়ে অন্যটিকে  সাইড দেওয়া হয়। নরি শুধু স্থানীয়দের প্রধান যাতায়াত মাধ্যম নয়,  এটি পরিচিত আছে ক্যাম্বোডিয়ার অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন আকর্ষণ ব্যাম্বো ট্রেন হিসেবেও, প্রতিবছর হাজার হাজার পর্যটক বিভিন্ন দেশ থেকে যায় ক্যাম্বোডিয়ার এই ব্যাম্বো ট্রেন চরতে।
এবারের তিনটিতে আছেনা ঘোড়া না যান্ত্রিক ইঞ্জিন, বিপদজনক যোগাযোগব্যবস্থা ফিলিপাইনের রাজধানী ম্যানিলার যাত্রীরা ট্রাফিকের হাত থেকে বাঁচতে বেছে নিয়েছে বিপদজনক পরিবহন  যোগাযোগ ব্যবস্থা , নিয়মিত ট্রেন চলাচলের লাইনে চলে মানবচালিত ট্রেন , যেটি স্থানীয় ভাবে ট্রলি নামে পরিচিত। এই ট্রেনে একসাথে ৪ জন যাত্রী চড়তে পারেন ,যাত্রীদের সুবিধার্থে থাকে ছাতার ব্যবস্থাও , ধাক্কা দিয়ে চালানো হয় এই ট্রেন নেই কোন ব্রেকের ব্যবস্থা না কোনও ইঞ্জিন । হঠাৎ করে ট্রেন চলে আসলে যাত্রীসহ এই ট্রলিটিকে নামানো হয় ট্রেন লাইন থেকে , নিরাপত্তা প্রচুর পরিমাণে শক্তি থাকা সত্ত্বেও এই ট্রেনটি স্থানীয় বাসিন্দা ও পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় ও জনপ্রিয় ।
ট্রাক ট্রেন , না হাতের টানা কিংবা ঘোড়া নয় এই ট্রেন চলে ট্রাক দিয়ে , মিয়ানমারের নামতু থেকে বাউদুইন পর্যন্ত চলে পুরাতন ট্রাক দিয়ে বানানো এই ট্রেন । মূলত এই ট্রেন ও ট্রেন লাইন ,খনি থেকে কয়লা পরিবহনের জন্য ১৯০৬ সালে নির্মাণ করা হয়েছিল । পরে এটি পরিত্যক্ত হলে স্থানীয়রা পুরাতন ট্রাক দিয়ে চালু করে এই বিশ্বের অদ্ভুত ট্রাক ট্রেন , প্রাক্তন এর পাশাপাশি নামতু এখনো চলে দুটি স্টিম ইঞ্জিনে ট্রেন  , তবে মিয়ানমারের অনেক অঞ্চলের মত  এখনোও সরকারি অনুমতি ছাড়া বিদেশিদের প্রবেশে  রয়েছে নিষেধাজ্ঞা ।
হ্যাঁ বুলেট ট্রেন তো সবাই শুনেছে,তবে বাঁশ - ট্রাক ঘোড়ায় টানা ট্রেন এখনো চলে বিশ্বের  প্রান্তরে , অদ্ভুত ও আকর্ষণীয় অনেক যাতায়াত মাধ্যম রয়েছে বিশ্বের অন্তরে লুকিয়ে ।


మరింత సమాచారం తెలుసుకోండి: