পাকিস্তানের সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘনের জবাব দিতে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে পাল্টা গোলাবর্ষণ করল ভারত। তংধার সেক্টরে পাক হামলায় নিহত হন দুই সেনা ও এক গ্রামবাসী। সেনার বক্তব্য, ভারতের গোলাবর্ষণে নিয়ন্ত্রণরেখার কাছে থাকা অন্তত তিনটি পাক জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংস হয়েছে। পাক সেনা ও জঙ্গি মিলিয়ে নিহত অন্তত কুড়ি।

এর আগে উরির সেনা ঘাঁটি এবং পুলওয়ামায় আধাসেনার উপরে হামলার জবাবে পাক অধিকৃত কাশ্মীর ও পাকিস্তানের বালাকোটে অভিযান চালিয়েছিল ভারত। এ বার জঙ্গি ঘাঁটি লক্ষ্য করে গোলাবর্ষণ করেছে সেনা। অন্য দিকে মহারাষ্ট্র ও হরিয়ানায় ভোটের ঠিক এক দিন আগে নিয়ন্ত্রণরেখায় সংঘর্ষ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে কংগ্রেস-আরজেডির মতো বিরোধী দলগুলি।

 

ভারতীয় সেনার বক্তব্য, জম্মুর কাঠুয়ায় মনইয়ারি-চোরগলি এলাকা লক্ষ্য করে পাক রেঞ্জার্স মর্টার ছুড়লে আহত হন সাদিক আলি নামে এক ব্যক্তি। এর পরে আজ ভোর রাত থেকেই কুপওয়ারার তংধার সেক্টরে বিনা প্ররোচনায় গুলি-গোলা চালাতে শুরু করে পাকিস্তান। সেনার সন্দেহ, সম্ভবত জঙ্গি অনুপ্রবেশ ঘটাতেই ওই হামলা চালানো হয়। পাক হামলায় নিহত হন পদমবাহাদুর শ্রেষ্ঠ ও জামিলকুমার শ্রেষ্ঠ নামে দুই সেনা। পদমবাহাদুর অসমের গোলাঘাট জেলার বরপথারের বাসিন্দা। জামিলকুমারের বাড়ি নেপালের পাল্পায়। মৃত্যু হয় মহম্মদ সিদিক নামে তংধার এলাকার এক গ্রামবাসীরও। জবাবে তংধারের উল্টো দিকে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের নীলম উপত্যকায় থাকা জঙ্গি ঘাঁটি লক্ষ্য করে প্রত্যাঘাত করে ভারতীয় সেনা। মর্টারের পাশাপাশি বফর্সের মতো কামানও ব্যবহার করে ভারত। এ ক্ষেত্রে বফর্সের ব্যবহার যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন প্রাক্তন মেজর জেনারেল পি কে সহগল। প্রাক্তন সেনাপ্রধান শঙ্কর রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘এই জঙ্গি ঘাঁটিগুলি অস্থায়ী। প্রয়োজনে এগুলিকে নিয়ন্ত্রণরেখার কাছে নিয়ে আসে পাক সেনা। আবার প্রয়োজনে সরিয়ে নিয়েও যায়।’’

সন্ধ্যায় সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়ত বলেন, ‘‘জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংস করতেই কামান ব্যবহার করা হয়েছে। প্রাথমিক যে-তথ্য পাওয়া গিয়েছে, তাতে তিনটি জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংস হয়েছে। অল্পবিস্তর ক্ষতি হয়েছে আর একটির। ৬-১০ জন পাক সেনা ও সমসংখ্যক জঙ্গির মৃত্যু হয়েছে।’’ যে-ভাবে গোলাবর্ষণের পর থেকে জঙ্গি শিবিরগুলিতে রেডিয়ো নীরব হয়ে রয়েছে, তাতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছেন সেনাপ্রধান।

অপরদিকে আগামিকাল নির্বাচনের ঠিক আগে এই ঘটনার সময় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে কংগ্রেস-সহ অন্য বিরোধীরা। কংগ্রেস নেতা অখিলেশ সিংহের কথায়, ‘‘যখনই বড় কোনও নির্বাচন আসে তখনই যুদ্ধের জিগির ওঠে। অতীতেও দেখা দিয়েছে। কাল দু’রাজ্যে নির্বাচন। তার আগে আবার সেই একই চিত্র দেখা গেল।’’ আরজেডি নেতা মনোজ ঝা’র কথায়, ‘‘প্রশ্ন সময় নিয়েই। কেন ঠিক ভোটের আগেই যুদ্ধ হয়, সেটাই আশ্চর্যের!’’

 

 

 

 

 


మరింత సమాచారం తెలుసుకోండి: