এনপিআর এবং এনআরসিকে ‘ফাসিস্ত’ আখ্যা দিয়ে গুগল, উবের, আমাজন, টুইটার এবং ফেসবুকের মতো সংস্থায় কর্মরত ভারতীয় এবং ভারতীয় বংশোদ্ভূত কর্মীরা সম্প্রতি একটি খোলা চিঠি লিখেছেন। দেড়শো জনেরও বেশি কর্মী স্বাক্ষর করেছেন তাতে। তাঁরা ভারত সরকারের এই ‘ফাসিস্ত পদক্ষেপের’ বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া এবং প্রকাশ্যে তার নিন্দার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন সুন্দর পিচাই, সত্য নাদেলা-র মতো তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রের কর্তা এবং মুকেশ অম্বানীর মতো শিল্পপতির কাছে। 

‘টেকএগেনস্টফ্যাসিজম’ নামে একটি অনলাইন সংস্থায় চিঠিটি প্রকাশিত হয়েছে। সরকারের খেয়ালখুশি মতো ভারতের বিভিন্ন অংশে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়ার প্রস্তাবে সায় না দেওয়ার জন্য আর্জি জানানো হয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি কর্তাদের কাছে। তা ছাড়া, ইন্টারনেটে ইচ্ছেমতো সরকারপন্থী বিষয়বস্তুর প্রচার যাতে না চলে, সে দিকে লক্ষ্য রাখার অনুরোধও জানানো হয়েছে। 

চিঠিতে রয়েছে, ‘‘আমরা— তথ্যপ্রযুক্তি দুনিয়ার ইঞ্জিনিয়ার, গবেষক,  ডিজাইনার ও অ্যানালিস্টরা ফাসিস্ত ভারত সরকারের সমালোচনা করছি নির্দ্বিধায়। নাগরিকদের উপরে যে নির্যাতন এই সরকার চালাচ্ছে, তা নিন্দনীয়।’’ চিঠি-লেখকদের মধ্যে বেশির ভাগ কর্মী সান ফ্রান্সিসকো, সিয়াটল, লন্ডন, ইজ়রায়েল এবং বেঙ্গালুরুতে কাজ করেন। তাঁরা স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছেন, চিঠিতে যা লেখা রয়েছে, তা একান্তই তাঁদের নিজস্ব মতামত। কর্মস্থলের কোনও কর্তা তাঁদের প্রভাবিত করেননি। তাঁদের কথায়, ‘‘এনআরসি-র সঙ্গে মিলে সিএএ—একেবারে মুসলিম-বিরোধী একটি প্রকল্প। এর ফলে মুসলিমরা রাষ্ট্রহীন হয়ে পড়তে পারেন এবং বিশ্বজনীন ক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার হতে হবে তাঁদের। ভারতের আর্থিক দুর্দশা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে এই সঙ্কট আরও ভয়ঙ্কর জায়গায় পৌঁছবে।’’

তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার ওই কর্মীরা বলেছেন, ‘ভারতে ক্রমবর্ধমান বেকারত্ব, বৃদ্ধির হার কমে যাওয়া, কৃষক আত্মহত্যার মতো একাধিক ঘটনা আর্থসামাজিক সঙ্কট আরও বাড়িয়ে তুলছে। নিজেদের এই সব খামতি ঢাকার চেষ্টা করতে 

গিয়ে উগ্র জাতীয়তাবাদী ও বিভাজনমূলক রাজনৈতিক কৌশল নিচ্ছে ভারত সরকার।’ 

তাঁরা লিখেছেন, ‘ইন্টারনেটের মতো একটা উন্মুক্ত পরিসর, যাকে উন্নত করার জন্য তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীরা দিনরাত পরিশ্রম করছেন, তাকেও অসম, দিল্লি ও কাশ্মীরের মতো জায়গায় নিয়ন্ত্রণ করা 

হচ্ছে। ভারত ‘ডিজিটাল ইন্ডিয়া’-র দিকে এগোচ্ছে বলে প্রচার করা হচ্ছে, অথচ তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে ব্যবহার করে ভুয়ো খবর প্রচার করা হচ্ছে। পাশাপাশি, নাগরিকের ভিন্নমত চেপে দেওয়া হচ্ছে।’

সংস্থাগুলির কর্তাদের কাছে ওই কর্মীরা লিখেছেন, প্রযুক্তি যাতে ভাল কাজে ব্যবহার হয়, সেটা অন্তত দেখুন। 

 

 

 

 

మరింత సమాచారం తెలుసుకోండి: