জম্মু- কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা লোপকে হাতিয়ার করে সমস্ত মুসলিম রাষ্ট্র গুলিকে একজোট করতে যখন মরিয়া পাকিস্তান, ঠিক তখনি  রিয়াধে প্রথম ভারত-সৌদি সহযোগিতা পরিষদের বৈঠকে যোগ দিতে অক্টোবরের শেষে বিমানে উঠবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।    

বর্তমান ভূকৌশলগত রাজনীতির খেলায় নরেন্দ্র মোদীর রিয়াধ সফরটিকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন কূটনীতিকেরা। মুসলিম বিশ্বের সবচেয়ে বড় মঞ্চ ওআইসি-র রাষ্ট্রগুলির মধ্যে অনেক চেষ্টা করেও সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি অথবা বাহরাইনের মত দেশগুলিকে ভারতের কাশ্মীর নীতির বিরোধিতায় পাশে পায়নি পাকিস্তান। বরং গত মাসের শেষে নিউ ইয়র্কে রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ অধিবেশনে ইমরান খানের দেওয়া পরমাণু হুমকির সমালোচনাই করেছিল সৌদি। পরে পাকিস্তান নেতৃত্ব এই অভিযোগ করেন যে, ভারতের ‘বিশাল বাজারের হাতছানিতে’ অনেক দেশ জম্মু-কাশ্মীরের মুসলিম সম্প্রদায়ের  মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে চোখ বুজে রয়েছে।

রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার কমিশনে কাশ্মীর নিয়ে ভারত-বিরোধী প্রস্তাব আনার পক্ষে সওয়াল নিয়ে আড়াআড়ি ভাবে বিভক্ত ওআইসি। এক দিকে প্রস্তাব আনার পক্ষে রয়েছে পাকিস্তান, তুরস্ক, মালয়েশিয়ার মতো দেশগুলি। অন্য দিকে সৌদি, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, বাহরাইনের মতো দেশগুলি এর বিরোধিতা করছে। মোদী তাঁর আসন্ন রিয়াধ সফরে বাণিজ্যিক এবং কৌশলগত ভাবে রিয়াধকে আরও কাছে টানার চেষ্টা করবেন বলে জানাচ্ছে বিদেশ 

মন্ত্রক। মন্ত্রক সূত্রের খবর, শক্তি, তেল, কৃষি, খনিজ, পরিকাঠামো ক্ষেত্রে বিপুল বিনিয়োগ করতে চলেছে সৌদি আরব। পাশাপাশি মৌলবাদ এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে গোয়েন্দা তথ্য সমন্বয় বাড়ানো নিয়েও আলোচনা ও চুক্তিপত্র সই হওয়ার কথা রয়েছে দু’দেশের। কয়েক সপ্তাহ আগে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল রিয়াধে গিয়ে গোটা নকশাটি তৈরি করে এসেছেন।

সৌদি যুবরাজ মহম্মদ বিন সলমনের সঙ্গে মোদীর রসায়ন অনেকটাই সাহায্য করছে পশ্চিম এশিয়ায় রাজনীতিতে ভারতকে সুবিধেজনক জায়গায় নিয়ে যেতে। ফেব্রুয়ারি মাসে পুলওয়ামা আক্রমণের পরে ভারত সফর করেছিলেন সলমন। সে সময়ে ইসলামাবাদ সফর সেরে তাঁর নয়াদিল্লিতে আসার কথা ছিল। কিন্তু মোদীর অনুরোধে তিনি সফরসূচি বদলে ফেলে পৃথক ভাবে ভারতে রাষ্ট্রীয় সফর করেন। রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সম্মেলনে যোগ দিতে নিউ ইয়র্কে যাওয়ার জন্য ইমরানকে সৌদির পক্ষ থেকে বিমান দেওয়া হলেও, সেখানে তাঁর বক্তৃতায় ক্ষোভ গোপন করেননি যুবরাজ। ইমরান ফেরার সময়ে বিমানে ‘যান্ত্রিক ত্রুটি’র কারণে তাঁকে বেসরকারি বিমানে ফিরতে হয়। এই ঘটনাটিকেও গুরুত্ব দিয়ে দেখতে চাইছে সাউথ ব্লক। 

সব মিলিয়ে মোদীর সৌদি সফর অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

 


మరింత సమాచారం తెలుసుకోండి: